প্রভাতী ডেস্ক: বহুল প্রতীক্ষার পর অবশেষে মার্চেই গ্যাস সংযোগ পাচ্ছেন আবাসিক গ্রাহকরা। বিদ্যুৎ , জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে কিছু প্রতিবেদন চেয়েছে। এসব ব্যাখার উত্তর দেওয়ার পরপরই আবাসিকে নতুন গ্যাস সংযোগ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে। নতুন বছরের জানুয়ারিতে দরপত্র আহ্বান করার পর মার্চেই আবাসিকে নতুন গ্যাস সংযোগ পাবেন গ্রাহকরা।
প্রায় ১০ বছর ধরে আবাসিকে গ্যাস সংযোগ বন্ধ রয়েছে। ২০১৯ সালের ১৮ মার্চ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশে গঠিত কমিটি শহরাঞ্চলে গ্যাসের নতুন আবাসিক সংযোগ চালু করার সুপারিশ করে। বিদেশ থেকে আমদানি করা তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) পাইপলাইনের মাধ্যমে আবাসিকে সরবরাহ করার কথা বলে এই কমিটি। কিন্তু গত দেড় বছরেও এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়।
কেজিডিসিএলের একজন কর্মকর্তা বলেন, নতুন গ্যাস সংযোগের বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে কথা বলেছি। তারা নতুন গ্যাস সংযোগ দেওয়ার কথা বলেছেন। তবে এর আগে কিছু বিষয়ের উপর ব্যাখা চেয়েছেন। আমরা কয়েকদিনের মধ্যে এসব ব্যাখার উত্তর দিয়ে দেবো। তিনি বলেন, ডিসেম্বরের মধ্যেই নতুন গ্যাস দেওয়ার প্রক্রিয়ার অনুমোদন পেতে পারি। তারপর জানুয়ারিতে দরপত্র আহ্বান করবো। দরপত্রের কাজ শেষ হলে মার্চের দিকে নতুন গ্যাস সংযোগ দেওয়া শুরু হবে।
তিনি আরো বলেন, কেজিডিসিএল সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম অঞ্চলে পুরনো ২৫ হাজার আবেদনকারী রয়েছে। আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হলে আরো ৫০ হাজার যুক্ত হবে।
সবমিলিয়ে ৭৫ হাজারেরও বেশি নতুন গ্যাস সংযোগ দেওয়া হতে পারে। বর্তমানে চট্টগ্রামে প্রায় ৬ লাখ আবাসিক গ্রাহক রয়েছে।
এদিকে রাজশাহী নগরীর ১১ হাজার গ্রাহকের আবেদনপত্র পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডের (পিজিসিএল) দফতরে পড়ে আছে। এদের মধ্যে সাড়ে ৫০০ গ্রাহকের নামে ডিমান্ড নোটও ইস্যু হয়ে আছে। কিন্তু সরকারি নির্দেশনা না থাকায় তাদের গ্যাস সরবরাহ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। গ্যাস না পেয়ে অনেক গ্রাহক তাদের জমা দেয়া টাকা ফেরত নিয়েছেন। ডিমান্ড নোট ইস্যু হওয়া গ্রাহকরা ন্যুনতম ৬ হাজার ৩০০ থেকে শুরু করে ৫০/৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ করেছেন। কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরেও তারা গ্যাস সংযোগ পাননি।
বাসা বাড়িসহ শিল্প প্রতিষ্ঠানে গ্যাস সংযোগের জন্য দীর্ঘ সময় আন্দোলন করেছেন রাজশাহীর মানুষ। এ দাবিতে হরতাল কর্মসূচিও পালিত হয়েছে। এরপর ২০১৩ সালে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের আগে রাজশাহীতে গ্যাসের পাইপলাইন স্থাপন করা হয়। ব্যয় করা হয় ১০৮ কোটি টাকা। এরপর ৯ হাজার ১৫৫টি বাসাবাড়িতে গ্যাস সংযোগ দেয়া হয়। এর দুই বছর পর গ্যাস সংযোগ প্রদানের কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়। এতে আটকে যায় ডিমান্ড নোট ইস্যু হওয়া গ্রাহকের গ্যাস সংযোগ।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০০৯ সালের ২১ জুলাই থেকে শিল্প ও বাণিজ্যিকে নতুন গ্যাস সংযোগ দেওয়া বন্ধ করা হয়। এরপর ২০১০ সালের ১৩ জুলাই থেকে আবাসিকেও নতুন গ্যাস-সংযোগ বন্ধ করা হয়। ২০১৩ সালের ৭ মে আবাসিকে সংযোগ দেওয়া শুরু হলেও কিছুদিন পরই তা আবার বন্ধ করে দেওয়া হয়। অবশেষে নতুন বছর আবাসিকে গ্যাস দেয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।