প্রভাতী ডেস্ক : নগরীর নাসিমন ভবনস্থ বিএনপির অফিসের সামনে আওয়ামী লীগ-বিএনপির সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (২০ জানুয়ারি) পৌনে ১১টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। এ সময় রাবেয়া রহমান লেইনে নির্বাচনী মিছিলে ককটেল বিস্ফোরণ এবং নির্বাচন ক্যাম্পে ভাঙচুর করা হয়েছে দাবি করেছেন ২১নং জামালখান ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ মনোনীত কাউন্সিলর প্রার্থী শৈবাল দাশ সুমন। এজন্য তিনি বিএনপির মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেনকে দায়ী করেন। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ডা. শাহাদাত হোসেন উল্টো বিএনপি কার্যালয়ে ককটেল বিস্ফোরণ ও গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ করেন। খবর পেয়ে কোতোয়ালী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। রাত সোয়া ১১টায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে দেখা যায়, নাসিমন ভবনের সামনে নুর আহম্মদ সড়কে বিক্ষোভ করেন শৈবাল দাশ সুমনের সমর্থকরা। এ সময় পুলিশ বিক্ষোভকারীদে সরিয়ে দেয়।
জানতে চাইলে শৈবাল দাশ সুমন বলেন, এটি পরিকল্পিত হামলা। আমরা শান্তিপূর্ণ মিছিল নিয়ে ক্যাম্পের দিকে যাচ্ছিলাম, এরমধ্যে মিছিলের পেছনে ককটেল ছুড়ে মারা হয়। আমাদের লোকজন তাদের ধাওয়া দিলে তারা বিএনপির পার্টি অফিসে ঢুকে যায়। ঘটনার ২-৩ মিনিটের মধ্যে ডা. শাহাদাত হোসেন হাজির হয়ে উস্কানিমূলক বক্তব্য দেয়া শুরু করে। তারপর বিএনপি অফিস থেকে বৃষ্টির মতো পাথর ছুড়তে থাকে। এ ঘটনায় আমাদের চারজন আহত হয়েছে।
বিএনপির মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন , আওয়ামী লীগের ছেলেরা পার্টি অফিসে ককটেল মেরেছে। খবর পেয়ে আমি দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সুফিয়ান ভাইয়ের গাড়িতে করে আসি। প্রবেশ করার সময় তারা পাথর মেরে গাড়ির গ্লাস ভেঙে দেয়। কিন্তু আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর প্রার্থী শৈবাল দাশ সুমনের অভিযোগকে ডাহা মিথ্যা উল্লেখ করে বলেন, এসব বানোয়াট কথাবার্তা। পার্টি অফিসে ৭/৮ জন ছেলে ছিল। তাদেরকে অবরুদ্ধ করে রাখার খবর পেয়ে আমি ছুটে আসি। আমি নিজেই কোতোয়ালী থানার ওসিকে এবং রিটার্নিং অফিসারকে ফোন করি। প্রতিদন পার্টি অফিসের সামনে পুলিশের গাড়ি থাকে। আজ ছিল না কেন? এখন নির্বাচন, আরো বেশি থাকার কথা।
সিআরবি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই রবিউল জানান, ঘটনার পর পর আমরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি।
এর আগে নগরীর বলিরহাট এলাকায় মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরীর সমর্থনে গণসংযোগের সময় ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মীর ওপর হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ৩ জন আহত হয়েছেন। ছাত্রলীগ এই হামলার জন্য যুবদলের নেতাকর্মীদের দায়ী করেছে। অপরদিকে একই ধরনের অভিযোগ করেছে যুবদল।
নগর যুবদলের সাংগঠনিক এমদাদুল হক বাদশা জানান, ডা. শাহাদাত হোসেনের গণসংযোগ শেষ করে পথসভা চলাকালে হঠাৎ পেছন থেকে লাঠিসোটা নিয়ে এলাকার আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী মোহাম্মদ হারুনের ভাতিজা ইমরান ও ছাত্রলীগের এনামুল হক মানিকের নেতৃত্বে হামলা চালায়। এসময় অন্তত ৪/৫ রাউন্ড গুলি চালায়। হামলায় আমাদের ১০-১৫ জন আহত হয়েছেন।
এদিকে আওয়ামী লীগ নেতাদের দাবি, সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরীর নির্বাচনী প্রচারণা করার সময় বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা অতর্কিত হামলা চালিয়েছেন। এতে তাদের দুইজন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে ১৮ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক সোহান (২৪) নামে একজনের মাথায় গুরুতর জখম হয়েছে বলে জানান তারা।
জানতে চাইলে বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ রুহুল আমীন বলেন, কাছাকাছি স্থানে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীর পক্ষে ছাত্রলীগ এবং বিএনপির মেয়র প্রার্থীর পক্ষে যুবদল গণসংযোগ করছিলেন। একপর্যায়ে যুবদলের নেতাকর্মীরা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে অন্তঃত তিনজন আহত হয়েছেন।